অ ন্ত রা লে (প্রথম খণ্ড) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি
![]() |
অ ন্ত রা লে (প্রচ্ছদ - ডঃ অসিত কুমার মাইতি) |
শনিবার বেলা সাড়ে তিনটে। এই তোরা আজ কোন বদমাশি না করে তাড়াতাড়ি পড়া দেখিয়ে নে। আর কোন অসুবিধা থাকলে বল। আজ আমাকে একটু বাড়ি যেতে হবে। বুবাই বলল স্যার বাড়িতে কি কোন সমস্যা আছে?
না তেমন কিছুই না, তবে একটু ! বলে তিনি চুপ করে যান কিন্তু মনের ভেতরে যে একটা চাপা কষ্ট আছে তা উনার মুখ দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। ছাএ ছাত্রীদের মধ্যে কয়েকটা প্রশ্ন জেগেছিল কিন্তু ঐ দিন আর বলতে পারেনি। ঐ দিন কোচিং শেষ করে স্যার খুবই দ্রুততার সাথেই বাড়ির উদ্দেশ্য বেরিয়ে যান।
অভিরাজ বাবুর কোচিং সেন্টার। তিনি একজন রসায়নের শিক্ষক। খুবই অল্পপরিসরে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। আজকে উনি সবার কাছে একজন প্রিয় শিক্ষক। তিনি নিজেকে একটা দূরন্ত গতিবেগে ছুটে যাওয়া বুলেটের মত নিয়ে চলেন। ছোটবেলার থেকেই পড়াশোনা, খেলাধুলা সমস্ত দিকেই তিনি পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। উনার জীবনের একটা দিক, যে উনি সর্বদাই আগে লক্ষ্য স্থির করেছেন, তারপর তাকে সফল করার জন্য চেষ্টা করেছেন। এটাই আমাকে উনার প্রতি মুগ্ধ হতে, ভালোবাসতে এবং উনাকে নিয়ে কাজ করতে উদ্যোগী করে তুলেছে।
যাই হোক, আবার যথারীতি পরের সপ্তাহে সোমবার আবার কোচিং শুরু হল ঠিক বিকেল সাড়ে
চারটে নাগাদ। কিন্তু ঐ দিন স্যারকে একটু বিষন্ন লাগছিল। কি যেন একটা চাপা যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে আজ উনি এসেছেন। আমার মনের মধ্যে কয়েকটা প্রশ্ন জেগেছিল। কিন্তু আমার নিজের অবহেলার জন্যে বলতে পারব না ভেবেই বুবাইকে
দিয়ে বলিয়েছিলাম। আমার অবহেলা বলতে, আমি একটু সবার থেকে আলাদা ছিলাম। আমি পড়তাম, শুধু বুঝতে আর সেটা দিয়ে ভাবি ভবিষ্যতে অন্যদের কোন সুবিধা দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতাম। তাই আমার পড়াশোনায় নজর ছিল মৃদু। সবাই পড়ত বই খাতা নিয়ে আর আমি পড়তাম আমার আশেপাশের সব কিছু নিয়ে এটা দিয়ে সৃষ্টিও করতাম। তাই স্যারদের কাছে বেশি কিছু বলতাম না। সবার কথা শুনতাম। কিন্তু অভিরাজ বাবু আমাকে বলবার সুযোগ দিতেন আমার তখন খুবই আনন্দ হত। আমি তখন ভাবতাম যে উনি পড়ার মাঝেও আমার এমন সব উল্টো - পাল্টা কথা শুনছেন। ঐ দিন আমি বুবাইকে বলতে বললাম যে স্যার কেন আগের দিন বাড়ি গিয়েছিলেন? আর কি সমস্যাই বা হয়েছিল? আমাদের এই কথাবার্তায় স্যার একটু ইতস্তত বোধ করে আমায় একটু বকাবকিও করেন। তবে যাই হোক উনি কিছুক্ষণ পরে পড়ানো একটু বন্ধ করতেই, বুবাই স্যারকে প্রশ্নগুলো করে।
যেহেতু আমরা স্যার এর প্রথম ব্যাচ ছিলাম বলেই উনি আমাদের সমস্ত কথাবার্তা শোনাতেন, যেটা অন্যান্যরা পেত না। ঐ দিন স্যার বললেন, "আমার একজন কাছের জন মারা গিয়েছে।" পরক্ষণেই উনি পড়াতে শুরু করে দিলেন। কিন্তু সীমা,কল্পনা,অনু,বুবাই আর বাকিদের নানান ধরনের প্রশ্ন শুনে শেষ পর্যন্ত অভিরাজ বাবু বলল, আমার একজন কাছের মানুষ আজ নেই। সীমা বলল," কে স্যার আপনার গার্লফ্রেন্ড নাকি?" স্যার বলল, না তেমন কিছু নয়। তবে আমার খুবই ভালো বন্ধু ছিল।
(চলবে...)
Waiting for next part 😊
ReplyDelete