অ ন্ত রা লে (৫ ম খণ্ড) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি
![]() |
অ ন্ত রা লে (প্রচ্ছদ - ডঃ অসিত কুমার মাইতি) |
অভিরাজ এরপর বারংবার যোগাযোগ করতে চেয়েও
করতে পারেনি, শেষমেশ বাধ্য হয়ে কারণটা জানতে কলকাতায়
অপূর্বার নার্সিংহোমে চলে এল। নার্সিংহোমের রিশেপশানিষ্ট কে অপূর্বার
কথা জিজ্ঞেস করতে বলল, উনি এক মাস ছুটিতেই আছে।
অভি ফিরে আসে। এক মাস পর আবারও নার্সিংহোমে এসে খোঁজ নিল, পুনরায় রিশেপশানিষ্ট বলল, ম্যাডাম একটি এমারজেন্সি
লিভ নিয়েছেন তিন দিন আগে। কোনো বিশেষ সূচনা থাকলে জানাতে পারেন
আমরা খবর করে দেব।
কথাটা শেষ হতে না হতেই , অভির ফোনে একটি অপরিচিত ফোন আসে – ফোনটা ধরতেই ফোনের ওপার থেকে বলল, দাদা আমি অপু দিদির পাশের বাড়ির ভাই অর্ঘ।
অভি জিজ্ঞেস করল – ভাই দিদি কোথায়? ওদিকে সবকিছু ঠিক আছে তো?
অর্ঘ ভয়ে বলল- না, দাদা এখানে কিছুই ঠিক নেই। দিদি মাস খানেক ধরে অসুস্থ, সারাদিন বিছানাতেই রয়েছে
বার দুয়েক ডাক্তার ও এসেছিল। এখন বাড়িতেও অবস্থা খুবই খারাপ, অক্সিজেন সিলিন্ডার চলছে। তুমি জান কিনা জানি না, আমাকে শুভমিতা (অপূর্বার বোন) একবার এটা জানাতে বলেছিল। তুমি পারলে একবার এসো। রাখছি দাদা।
ফোনটা কাটতে অভির পায়ের নীচে যেন মাটি
সরে গিয়েছিল।
অভি পরদিনই অপূর্বার বাড়ি চলে আসে।
অপু বিছানায় শুয়ে পাশে একটি অক্সিজেন
সিলিন্ডার।
অপুর মা জল এনে অভিকে দিয়ে বলল – বাবা ধর।
—ডাক্তার এসেছিলেন, অ্যাস্থেমা টা একটু বেড়ে গেছে। বলেই বাইরে চলে যায় অপূর্বার মা।
পরে অভি অপুকে নিয়ে কলকাতার বড় নার্সিংহোমে ভর্তি করে, অপূর্বা বারংবার আপত্তি করে কিন্তু অভি তা মানেনি।
অপূর্বাকে ভর্তি করানোর পরে তার মাকে অভি ওদের সম্পর্কের কথা সব জানিয়ে দেয়। একটা মাইনোর ট্রিটমেন্ট এর পর অপূর্বার জ্ঞান ফিরলে দেখে অভি পাশের চেয়ারে বসে ঘুমোচ্ছে। অপূর্বা বুঝতে পারলো আসলে কারা তাকে ভালোবাসে বন্ধুরা নাকি অভি।
কিন্তু ভগবানের কি পরিহাস, অপূর্বা যখন অভিকে কাছে পেতে চাইল তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।
অভি নিজের বাড়িতে অপূর্বাকে বিয়ে
করবার প্রস্তাব দিতে বাড়ির লোকজন অভিকে বলল—
দেখ বাবা মেয়েটির বাড়ির অবস্থা শোচনীয়
তার থেকেও বড় কথা মেয়েটি এমন অসুখে আছে, সে আর কতদিনই বা থাকবে? তারপর তোর কি হবে?
অভি বাড়িতে কিছু বলতে পারল না। পরদিন সোজা স্কুলে চলে এল।
মনে মনে স্থির করল বাড়িতে না মানলেও
অপূর্বাকে বিয়ে করে স্কুলের কাছে ঐ বাড়িতেই থাকবে। মঙ্গলবার একটা শুভদিনও ঠিক
করে নিল সাথে কিছু সোনা-দানা, পোষাক – আষাক ও কিনে নিল।
হঠাৎই শনিবার বেলা সাড়ে তিনটের সময়
একটা ফোন এল। ফোনের ওপারের কথাটা শুনেই অভি চকিত হয়ে উঠল।
(চলবে ...)
Comments
Post a Comment