মিঃ পারফেক্ট - ডঃ অসিত কুমার মাইতি


কি রে তোর মন খারাপ কেন? কিছু কি হয়েছে?

সুদীপ এর প্রশ্নে অনু ট্রেনের জানালার দিক থেকে মুখটা সুদীপের দিকে ঘুরিয়ে বসল।

-       আরে না না তেমন কিছু নয়।

-       বলতে পারিস যদি এখনও বন্ধু ভাবিস।

-       এরকম বলিস না। আসলে আকাশ এর সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে, তাই মনটা একটু খারাপ আছে।কি করব ঠিক ভেবে পাচ্ছি না।

-       কি হয়েছে?

-       তুই তো জানিস আমি আকাশকে কতটা ভালোবাসি, কিন্তু সে আর বুঝলো কই।

-       কেন কি হয়েছে? এই তো সেদিন তোরা বেশ কোথায় ঘুরতে গেছিলি। সেখানে কি কিছু হয়েছে?

-       না রে সেখানে সব ঠিক ছিল। মুর্শিদাবাদ থেকে আসার তিন দিন পর আকাশ এর মাসির মেয়ের বিয়ে ছিল।

ওর মাসির বাড়ির অবস্থা খুব ভালো। ওর মেসো আই পি এস অফিসার। আর ওর বাবার তো লিকার দোকান আছে। তাই ঐ বিয়ে বাড়িতে লিকারের একটা বিশাল স্টল ছিল, সেটা আকাশ আর ওর মাসির ছেলে রোহান দেখছিল। সেখনেই ওরা দুই ভাই সবার সাথে ঐ মদ খেয়েছে সে জন্যে আমাকে ফোনটাও করেনি সেদিন।

-       তুই কি করে জানলি?

-       আমাদের জুনিয়ার মৌলী কে চিনিস?

-       হ্যাঁ। একটু রোগা করে মেয়েটা তো?

-       হ্যাঁ। সে আমাকে বলল। তাদেরও ওখানে নিমন্ত্রণ ছিল। সে দেখেছে।

-       আমি আকাশকে জিজ্ঞেস করতে বলল, “তুই আজকাল অন্যের কথা শুনে আমাকে সন্দেহ করছিস, বাহ ভালো। যেদিন ঐ সন্দেহ দূর হবে সেদিন কথা বলিস।”

-       তা তুই কি ভাবলি?

-       আমি ওকে কি বলি বল? ও যে খুব জেদি ছেলে সেদিন এই নিয়ে অনেক কথাকাটি হয়েছে আমাদের মধ্যে। আমি ভাবছি কাল তো আমাদের কলেজের রেজাল্ট আর শেষ দিন আমি ওকে একবার শেষবারের মত সত্যিটা জানতে চাইব। দেখি ও কি বলে?

তুই কি যাবি আমার সাথে?

-       কোথায়?

-       কাল।

-       আচ্ছা ঠিক আছে?

-       আমার স্টেশান এসে গেছে আমি এখন আসি। আলবিদা! কাল তবে রেজাল্ট শেষে আসিস কিন্তু আমি অপেক্ষা করব ক্যান্টিনের কাছে।

অনু ট্রেন থেকে নামার পর সুদীপ এবার একটু আশ্বস্থ হল। সাথে সাথে মৌলী কে ফোন করে বলল থাঙ্ক ইউ, কাজ হয়েছে কি চাই বল তোর ইন্টারনেলে ৯০% নম্বর তো কাল হয়ে যাবে।

-       যদি না হয় তবে কিন্তু আমি আকাশ আর অনু কে সব সত্যি বলে দেবো।

-       ওকে। তুই আমার কাজ যখন আমার কাজ করেছিস আমিও করে দেবো।

-       ওকে বাই।

পরদিন শক্তিনগর মেডিক্যাল কলেজের রেজাল্ট।

সুদীপের বাবা শক্তিনগর মেডিক্যাল কলেজের মেডিক্যাল ডিপার্টমেন্ট হেড। তারই দ্বায়িত্বে কালকের ফাইনাল রেজাল্ট। সুদীপ রাতে বাবার ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তার ল্যাপটপটা নিয়ে মৌলীর ইন্টারনেলের নম্বর বাড়িয়ে দেয়।

পরদিন রেজাল্ট যথাসময়ে প্রকাশিত হল। সব ঠিকঠাক হল।

মৌলী ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করে গেল। এদিকে অনু আর সুদীপ ক্যান্টিনের পাশে অপেক্ষা করলেও আকাশ ওদিন রেজাল্ট নিতেই এলো না। 

(চলবে...)

Comments

Popular posts from this blog

দীপ্তি-তিমির আলয় (পর্ব ১) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি

গোধূলি - ডঃ অসিত কুমার মাইতি

🎨 রঙে রঙে অচিনপুর🎨 এক অচেনা চিত্রশিল্পীর গল্প - ডঃ অসিত কুমার মাইতি