আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি ( ৩য় পর্ব)
অধ্যায় ৩: সুরভির ছায়া
ভীমডাঙা গ্রামে হিম শীতের
সকাল। বাতাসে যেন যেন কিছুর আগমন বয়ে চলেছে। স্কুলের দরজা খোলার আগেই, গ্রামবাসীরা
ছড়িয়ে দিচ্ছে এক অদ্ভুত খবর—সুরভি ফিরে এসেছে।
আদিত্যর হৃদয় বেজে উঠে
অজানা এক ব্যথায়। বছর চার-পাঁচ পর আবার সেই মিষ্টি হাসি, ঝিকিমিকি চোখ, আর কোমল
শব্দে বলার সুর শুনতে পাচ্ছে সে।
পুরনো প্রেমিকা, নতুন
রহস্য
সুরভি এখন এক সম্পূর্ণ
অন্য মানুষ—চুল ছিঁড়ানো, চোখে গভীর নিদাহ, আর গলায় শিবলিঙ্গের রুদ্রাক্ষ মালা। সে
বলে, “আদিত্য, আমি ফিরেছি... তবে তুমি আমাকে আর আগে মতো পাবেন না।”
সে বলে, গ্রামের অতীতের
অন্ধকারে ডুবে থাকা অনেক কিছু এখন প্রকাশ পাবে।
শিবমূর্তি বদলে গেছে মন্দিরের
শিবমূর্তি আজকাল যেন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে ফেলেছে—রাত হলে মূর্তির চোখে যেন অগ্নি
জ্বলে। গ্রামের বাচ্চারা বলে, “শিবদা আমাদের ডাকছে।”
ঋষি একবার মন্দিরে এসে
আদিত্যকে বলে— “এই মূর্তি আর শুধু মূর্তি নয়, আদিত্য। এটা একটা জীবন্ত প্রতীক। এবং
এর ভেতর অনেক শক্তি লুকিয়ে আছে।”
দ্বিতীয় খুন
গ্রামের তৃতীয় খুন হয় এক
কৃষকের। তার ঘাড়ে চুম্বকের মতো ত্রিশূলের দাগ। আর তার রক্তমাখা হাত দিয়ে সে যেন
শিবমূর্তির দিকে চেয়েছিল।
গ্রামের বয়স্ক পন্ডিতরা
এবার সর্তক বার্তা দেয়—“শিবের রোষ এখন শিবমন্দিরকে ঘিরে। কেউ যাতে রাতে বাইরে না
যায়।”
ভয়ংকর স্বপ্ন
রাতের অন্ধকারে আদিত্য
স্বপ্নে দেখে—এক হাতে ত্রিশূল, অন্য হাতে তেজোময় শিবলিঙ্গ নিয়ে সুরভি দাঁড়িয়ে আছে,
তার চোখে অগ্নিপুঞ্জ। সে আদিত্যকে বলে— “আমাদের অঙ্গীকার ভেঙেছে, এখন রক্ত দিয়ে
মুছে ফেলতে হবে।”
সেদিন রাতে আদিত্য বুঝতে
পারে, শুধু অতীত নয়, তার বর্তমানেও একটা অবিশ্বাস্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে—যেখানে
প্রেম, বিশ্বাস, প্রতিশোধ আর ঈশ্বরের বিচারের ছায়া জড়িত।
(চলবে…)
Comments
Post a Comment