আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি (৬ষ্ঠ পর্ব)
অধ্যায় ৬: সত্যের যুদ্ধে
বিজয়
ভীমডাঙার রাত ছিল অন্ধকারে
মোড়া, বাতাসে যেন লুকিয়ে ছিল প্রাচীন এক গোপন শক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস। আদিত্য,
সুরভি ও ঋষি একসঙ্গে মন্দিরের নিচে থাকা গোপন কক্ষে প্রবেশ করল। তাদের প্রত্যেকের
মুখে ছিল ভয়ের পাশাপাশি অদম্য সাহস।
গোপন কক্ষে অভিযান
ঘরের ভিতরে ছিল প্রাচীন
স্তম্ভ, দেয়ালে খোদাই করা শিবের মূর্তি, আর এক কোণে রাখা ছিল এক পাণ্ডুলিপি এবং এক
অদ্ভুত প্রদীপ। প্রদীপের আলোয় পাণ্ডুলিপির অক্ষরগুলো জ্বলজ্বল করছিল।
আদিত্য পড়তে শুরু করল—“যে
প্রেম শিবের প্রতি অবিচল, সে অগ্নির মধ্য দিয়ে যাত্রা করে, অবশেষে মূর্তির মধ্যে
নিজেকে খুঁজে পায়।”
ঋষি বলল—“এই হলো ঈশ্বরের
আশীর্বাদ। কিন্তু এই আশীর্বাদের জন্য যুদ্ধ করতেই হয়।”
প্রতিপক্ষের মুখোমুখি
হঠাৎ দরজা ঘনঘন শব্দে
খুলল। গ্রাম্য কয়েক জন চেহারা ভেদে একদল লোক প্রবেশ করল, যারা আদিত্য ও সুরভির
পরিবারের প্রতিপক্ষ। তাদের চোখে ছিল শত্রুতার আগুন।
একটি ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু
হল। আদিত্য ও ঋষি সম্মিলিতভাবে তাদের সঙ্গে লড়ে, সুরভি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে
মন্ত্রপাঠ করে সবার মনোবল বাড়াল।
আদিত্যর পরিবর্তন ও সফলতা
সংঘর্ষের মাঝে আদিত্যর মনে
প্রবল এক আলোর ঝলকানি। সে বুঝতে পারল, ভগবানের প্রতি তার বিশ্বাসই তাকে শক্তি
দিচ্ছে। সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করল, মনকে স্থির করল।
তার হাতে ধরা ত্রিশূল যেন
সত্যের প্রতীক হয়ে উঠল।
সবাই পরাজিত হল। গ্রাম
শান্ত হল। মন্দিরের প্রতিটি কোণে ঈশ্বরের আশীর্বাদ বিরাজ করল।
অবশেষে, আদিত্য বুঝল—তার
জীবনের যন্ত্রণা, সংগ্রাম, প্রেম, বিচ্ছেদ, সবই যেন ঈশ্বরের ইচ্ছায় এক মহাকাব্যের
অংশ।
সে পুজো করল শিবকে, ফিসফিস
করে বলল—“তোমার পথে আমি যতই যাই, আমি ফিরে আসব তোমার আশ্রয়ে।”
তার শরীরে নতুন এক শক্তি
অনুভব করল। স্বপ্নে শিবের মুখো দেখল, হেসে বলল— “ভালো করেছিস, আদিত্য।”
এই হলো আদিত্য চক্রবর্তীর
যাত্রা—দুঃখ থেকে আশার, অন্ধকার থেকে আলো পর্যন্ত। শেষেও সে ছিল এক সফল মানুষ, যার
জীবনের গল্প সবার হৃদয়ে বাজে একটি মন্ত্রের মতো—
“বিশ্বাস রাখো, ঈশ্বরের
পথে পথ চলা কখনো বৃথা যায় না।”
Comments
Post a Comment