Posts

Showing posts from June, 2025

আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি (৬ষ্ঠ পর্ব)

Image
  অধ্যায় ৬: সত্যের যুদ্ধে বিজয় ভীমডাঙার রাত ছিল অন্ধকারে মোড়া, বাতাসে যেন লুকিয়ে ছিল প্রাচীন এক গোপন শক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস। আদিত্য, সুরভি ও ঋষি একসঙ্গে মন্দিরের নিচে থাকা গোপন কক্ষে প্রবেশ করল। তাদের প্রত্যেকের মুখে ছিল ভয়ের পাশাপাশি অদম্য সাহস।   গোপন কক্ষে অভিযান ঘরের ভিতরে ছিল প্রাচীন স্তম্ভ, দেয়ালে খোদাই করা শিবের মূর্তি, আর এক কোণে রাখা ছিল এক পাণ্ডুলিপি এবং এক অদ্ভুত প্রদীপ। প্রদীপের আলোয় পাণ্ডুলিপির অক্ষরগুলো জ্বলজ্বল করছিল। আদিত্য পড়তে শুরু করল—“যে প্রেম শিবের প্রতি অবিচল, সে অগ্নির মধ্য দিয়ে যাত্রা করে, অবশেষে মূর্তির মধ্যে নিজেকে খুঁজে পায়।” ঋষি বলল—“এই হলো ঈশ্বরের আশীর্বাদ। কিন্তু এই আশীর্বাদের জন্য যুদ্ধ করতেই হয়।”   প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হঠাৎ দরজা ঘনঘন শব্দে খুলল। গ্রাম্য কয়েক জন চেহারা ভেদে একদল লোক প্রবেশ করল, যারা আদিত্য ও সুরভির পরিবারের প্রতিপক্ষ। তাদের চোখে ছিল শত্রুতার আগুন। একটি ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হল। আদিত্য ও ঋষি সম্মিলিতভাবে তাদের সঙ্গে লড়ে, সুরভি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মন্ত্রপাঠ করে সবার মনোবল বাড়াল।   আদিত্যর পরিবর্তন ও সফল...

আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি (৫ম পর্ব)

Image
  অধ্যায় ৫: শিবের রূপান্তর ভীমডাঙা গ্রামে আজ এক অন্যরকম রাত। বাতাস নিঃশব্দ, চাঁদের আলো যেন হালকা নীলচে, আর শিবমন্দিরের পাশের পুরনো বটগাছের পাতাগুলো কাঁপছে না—একটা অতিপ্রাকৃত স্থিরতা। আদিত্য জানে, কিছু একটা ঘটতে চলেছে। "সত্য, প্রেম আর বিশ্বাস—এই তিনের মধ্যে দিয়ে এখন তার পরীক্ষা হবে।” শিবমূর্তির রূপান্তর মন্দিরের ভিতরে আজ শিবমূর্তি যেন ঠিক আগের মতো নেই। মূর্তির তিলক, চক্ষু, গলার নাগ ও ত্রিশূল থেকে এক অদ্ভুত দীপ্তি নির্গত হচ্ছে। গ্রামের পুরোহিতেরা ভয় পেয়ে বলে উঠল— “এ শিব নয়, এ রুদ্রের রূপ... ভগবানের রাগী প্রকাশ!” সেই মুহূর্তে মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করে আদিত্য, হাতে পাণ্ডুলিপি আর গলায় রুদ্রাক্ষ। সঙ্গে সুরভি ও ঋষিও। তিনজনের চোখে ভয় নেই, বরং একধরনের আত্মবিশ্বাস। মূর্তির দিকে তাকিয়ে আদিত্য বলে—“যদি আমি সৎ থাকি, তবে তুমি আমার প্রার্থনায় মুখ দেবে—নইলে নীরব থেকো।” ঠিক তখনই, মূর্তির কপালে এক বিন্দু আলো জ্বলে উঠল।   অলৌকিক শক্তির উন্মোচন ভেতরের অন্ধকার যেন ধীরে ধীরে নীলাভ হয়ে উঠল। এক অদৃশ্য কণ্ঠস্বর শুনতে পাওয়া গেল— “তোমরা প্রেমে বিশ্বাস করেছ, ত্যাগে আগুন দিয়েছ...

You Don’t Just Learn Art Here —You Discover Who You Are By - Dr. Asit Kumar Maity

Image
 You Don’t Just Learn Art Here —You Discover Who You Are  By - Dr. Asit Kumar Maity  There’s a silence that fills the room just before a student makes their first brushstroke. It’s not fear. It’s focus. It’s possibility. At our art school, that silence is sacred. It’s the space between self-doubt and self-expression. And it’s in that space that something beautiful begins. Art Is Not About Perfection We don’t believe in perfect lines or flawless technique as the end goal. We believe in process. In exploration. In that messy, magical space where mistakes lead to breakthroughs. Because art isn’t only about what you make — it’s about what you find along the way: Confidence where there used to be hesitation. Voice where there used to be silence. Identity where there used to be imitation. Every canvas, every sculpture, every short film, every photograph — it’s all a mirror. Not just of the world, but of the person holding the brush or the camera. What We Teach Can’t Be Goo...

আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি ( ৪র্থ পর্ব)

Image
  অধ্যায় ৪: গভীর সন্ধান   ভীমডাঙার সকালে হালকা কুয়াশা। আদিত্য মাটির ছোট বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। চোখে অদ্ভুত উদ্বেগ। তার হৃদয়ে একবারে জেগে উঠেছে অজানা এক প্রশ্ন—কেন তার জীবন যেন এক গোপন নিয়ন্ত্রণের আওতায়?   নিজস্ব তদন্ত শুরু আদিত্য বুঝতে পারল, এই রহস্যময় খুন, অদ্ভুত ঘটনা সবই তার অতীতের সঙ্গে জড়িত। তাই সে সিদ্ধান্ত নিল নিজের হাতে সত্য খুঁজে বের করার। সে রাতের আঁধারে মন্দিরের পুরাতন খাজানা ঘরটি খুঁজে দেখতে গেল। ঘরে ঢুকে সে খুঁজে পায় এক ধূলোমাখা বাক্স, যার ভেতর পুরনো পাণ্ডুলিপি, কিছু অক্ষর লেখা লোহার টুকরা, এবং এক পুরাতন চাবি। পাণ্ডুলিপির পৃষ্ঠাগুলোতে ছিল কালীঘাট মন্দিরের প্রাচীন ভাষায় লেখা কিছু রহস্যময় লেখা।   পাণ্ডুলিপির গোপন কথা পাণ্ডুলিপিতে লেখা ছিল—“যে কেউ শিবের রূপে নিজেকে ধ্বংস করে, সে দেহান্তরের পরেও ফিরে আসে। কিন্তু তার অন্তরে যদি ভয় হয়, তবে সে বোধহয় মুক্তি পায় না।” আদিত্য বুঝল, এটি শুধুমাত্র ভগবানের গল্প নয়, এটি তার নিজের জীবনের গল্প। সুরভির অতীত উন্মোচন সন্ধ্যায় আদিত্য সুরভির সঙ্গে কথা বলল। সে জানাল তার সব সত্য— “তার স্বামীর অন্ধকা...

আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি ( ৩য় পর্ব)

Image
  অধ্যায় ৩: সুরভির ছায়া   ভীমডাঙা গ্রামে হিম শীতের সকাল। বাতাসে যেন যেন কিছুর আগমন বয়ে চলেছে। স্কুলের দরজা খোলার আগেই, গ্রামবাসীরা ছড়িয়ে দিচ্ছে এক অদ্ভুত খবর—সুরভি ফিরে এসেছে। আদিত্যর হৃদয় বেজে উঠে অজানা এক ব্যথায়। বছর চার-পাঁচ পর আবার সেই মিষ্টি হাসি, ঝিকিমিকি চোখ, আর কোমল শব্দে বলার সুর শুনতে পাচ্ছে সে।   পুরনো প্রেমিকা, নতুন রহস্য সুরভি এখন এক সম্পূর্ণ অন্য মানুষ—চুল ছিঁড়ানো, চোখে গভীর নিদাহ, আর গলায় শিবলিঙ্গের রুদ্রাক্ষ মালা। সে বলে, “আদিত্য, আমি ফিরেছি... তবে তুমি আমাকে আর আগে মতো পাবেন না।” সে বলে, গ্রামের অতীতের অন্ধকারে ডুবে থাকা অনেক কিছু এখন প্রকাশ পাবে। শিবমূর্তি বদলে গেছে মন্দিরের শিবমূর্তি আজকাল যেন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে ফেলেছে—রাত হলে মূর্তির চোখে যেন অগ্নি জ্বলে। গ্রামের বাচ্চারা বলে, “শিবদা আমাদের ডাকছে।” ঋষি একবার মন্দিরে এসে আদিত্যকে বলে— “এই মূর্তি আর শুধু মূর্তি নয়, আদিত্য। এটা একটা জীবন্ত প্রতীক। এবং এর ভেতর অনেক শক্তি লুকিয়ে আছে।”   দ্বিতীয় খুন গ্রামের তৃতীয় খুন হয় এক কৃষকের। তার ঘাড়ে চুম্বকের মতো ত্রিশূলের দাগ। আর তার রক্তম...

আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি (২য় পর্ব)

Image
  ভীমডাঙা গ্রামের সকালগুলো হয় চুপচাপ। কেউ খুব জোরে কথা বলে না। শুধু স্কুলের ঘন্টা, ছেলেমেয়েদের কাঁচা গলার আওয়াজ, আর মন্দির থেকে আসা ধূপের গন্ধ। এই নিরব ছন্দ ভাঙল এক অচেনা মানুষের আগমনে।   হঠাৎ আগন্তুক সেদিন সকালবেলা হেডমাস্টার মহাশয় রুমে ঢুকে জানালেন, “আজ থেকে একজন নতুন শিক্ষক যোগ দিচ্ছেন। কলকাতা থেকে এসেছেন। উচ্চতর গণিত পড়াবেন।”   তার নাম—ঋষি ঘোষ। বয়স হবে ত্রিশ কি বত্রিশ। হালকা পাতলা গড়ন, চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা, মুখে কাটা দাগ—যেটা সে গোঁফের নিচে লুকিয়ে রাখে। তবে সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার, তার চোখ। ঋষির চোখ দুটো যেন ধোঁয়ায় ঢাকা—অদ্ভুত, দৃষ্টিহীন না হয়েও এমন যেন অনেক কিছু দেখে ফেলে, যা বলা যায় না। আদিত্য প্রথম দিনেই টের পায় কিছু—এই লোকটা যেন তাকে ‘চেনে’।   অতীতের প্রতিচ্ছবি ঋষিকে দেখে হঠাৎই আদিত্যর মনে পড়ে যায় অনেক বছর আগের একটা বিকেল। শিয়ালদহ স্টেশনের ধারে এক ঝড়বৃষ্টির মধ্যে সে ও সুরভি একটা দোকানের নিচে দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই এক ছেলে—অল্প বয়সী, কাঁদছিল। মুখে ছিল ক্ষত। সুরভি ছুটে গিয়ে তাকে আদর করেছিল। বলেছিল, “তোমার নাম কী?”   সে বলেছিল, “ঋ… ঋষ...

আস্থা - ডঃ অসিত কুমার মাইতি (১ম পর্ব)

Image
  বছরের শেষ ছিল ডিসেম্বর, রাতের আকাশে কুয়াশা নামছে ধীরে ধীরে, আর জঙ্গলপথে ভোঁ ভোঁ শব্দ তুলে উড়ছিল বাতাস। চারিদিকে এমন একটা নিঃস্তব্ধতা, যেন কেউ নিঃশব্দে নজর রাখছে। ঝাড়গ্রামের গহীন অরণ্যের মাঝে এক নাম-না-জানা গ্রাম—ভীমডাঙা। এই গ্রামের প্রান্তেই ছিল একটা পুরনো, মাটির দোচালা কুঁড়েঘর, যার পাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল এক শতাব্দীপ্রাচীন শিবমন্দির। এখানে দিনের আলো ঢোকে না ঠিকমতো, রাত হলে বাতাস ঠান্ডা নয়, বরং ভারি হয়ে ওঠে। লোকমুখে শোনা যায়—এই মন্দিরে ভগবান শিব নিজে বসবাস করেন। লোকেরা বলেন, “এই দেবতা নীরব… কিন্তু চোখ বুজে থাকেন না।” এই গ্রামের একমাত্র স্কুলের শিক্ষক—আদিত্য চক্রবর্তী—এই কুঁড়েঘরেই থাকে। তার বয়স এখন ৩৫, এক নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করে। কিন্তু তার চোখে এমন কিছু আছে যা কেবল একবার যুদ্ধে হেরে যাওয়া সৈনিকের চোখেই দেখা যায়। প্রতিদিন ভোরবেলা সে উঠে পড়ে, স্নান করে, সাদা ধুতি পরে, তারপর শিবমন্দিরে গঙ্গাজল দিয়ে পুজো করে। আর তারপর স্কুলে যায়। কিন্তু এই চেনা দিনের আড়ালেও লুকিয়ে আছে এমন একটা অতীত, যা কেউ জানে না।   অতীত: ছাইয়ের নিচে আগুন তখন সে কলেজে পড়ে কলকাতায়। শহুরে জীবনের...

সেই গন্ধটা আজও আছে (পর্ব - ৪) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি

Image
  “আ জ থেকে ছয় বছর আগে আমার সাথে সান্তনার সাক্ষাৎ হয়। তাতে আমরা পরস্পরের প্রেমে পড়ে যাই। বিয়ের কথাও হয়েছিল বিয়েতো হলোই না। আসলে সারা বিশ্ব-প্রকৃতি তাকে আমার কাছে পাঠালেও শুধু এই একটা জাতি তাকে আমার কাছে আসতে দিল না, আর সেটা হল মনুষ্য জাতি। তাছাড়া আমার এই মৃত্যু কেন হল কিভাবে হল কারা দায়ী সেকথা কেউ না জানলেও চলবে। যা কিছু সিদ্ধান্ত তা সম্পূর্ণ আমার সিদ্ধান্ত।” কথাগুলো শেষ হতে না হতেই আমি আর যেই পকেট থেকে সিগারেট বের করে আগুন দিলাম অমনি আমি যেন ঘন ধোঁয়াশার মধ্যে চলে গেলাম, সামনে ঘুটঘুটে অন্ধকার, আর কিছুই দেখতে পেলাম না। আমার হুঁশ ফিরল মোহন দও, আরও কিছু জনের গলার ডাকে। উঠে দেখলাম মোহন দও, রমেশ ড্রাইভার সঙ্গে আরও আট-দশজন লাঠিয়াল সর্দার বড় বড় লাঠি আর বড় লণ্ঠনের আলো নিয়ে আমায় খুঁজতে এসেছে। মোহন আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে, জোরে জোরে দম ছেড়ে স্বস্তির শ্বাস নিচ্ছে। রমেশ ড্রাইভার বলল," বাবু আপনার কোনো ক্ষতি হয়নি তো, আপনি এতক্ষন কী করছিলেন? শুধুই কী ঘুরে বেড়াচ্ছেন নাকি? কোন কিছু দেখেছিলেন নাকি? এমন অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন। আমি হেসে বললাম, আরে আমিতো এখানে একটা বোনের সাথে এতক্ষন জমিয়ে গল্প করলাম। এখান...

সেই গন্ধটা আজও আছে (পর্ব - ৩) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি

Image
  দি দিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন, বাবা টলিওয়ালাকে টাকা দিয়ে বাড়িতে এসে কত কী হিসাব করে বাজারের ব্যাগটা নিয়ে চলে গেলেন। মা বাড়িতে বাচ্চাদের টিউশান পড়াত, বাচ্চারা এসে পড়ায় তাদেরকে মা পড়াচ্ছিলেন। দিদি ফোন করে ব্যাপারটা সুরঞ্জন দাকে জানায়, কিছুক্ষণের মধ্যে বাবার গলার আওয়াজ পেয়ে ফোনটা কেটে দেয় দিদি। বাবা-মাকে কী একটা বলল, তারপর বাচ্চাগুলোকে ছুটি করে দেয় বাচ্চারা যাওয়ার পর বাবা দিদিকে বাইরে এনে কিছু না বলেই মায়ের হাত থেকে বেতটা নিয়ে তীব্র প্রহার করতে থাকে। আর মা দিদির বই-খাতা, জামা-কাপড় টেনে এনে এই নর্দমায় ফেলতে থাকে। হাতের কাছে যেটাই পেল তাই দিয়ে দিদিকে প্রচন্ড প্রহার করল, প্রহারের চোটে দিদির চোখের ওপর, কপাল, নাক, মুখ ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে, টানাটানিতে শাড়িটাও ছিঁড়ে গেছিল। বাবা-মা ওদিন দিদির প্রতি এতটা নিষ্ঠুরতা দেখাল যে, শেষ পর্যন্ত বাবা দিদির বুকে লাথি মেরে এই নর্দমায় ফেলে দেয়। আর বলেছিল, ‘এই মেয়ে আমার চাইনা।’ আমিতো আঁতকে উঠি। মেয়েটি বলে “আর বললে হবে, তার ভাগ্যের দোষ ছিল। বাবা-মায়ের ভয়ে এই গ্রামে এতগুলো লোক থাকতেও কেউ সাহস করে বাবাকে বাধা দিতে পারল না, এমনকি দিদিতো এই একগলা নরম থক্-থকে কাদা...

সেই গন্ধটা আজও আছে (পর্ব - ২) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি

Image
  হ্যাঁ! হ্যাঁ! নিশ্চই। আমরা সাঁকো পেরিয়ে সামনে বাড়িটাতে ঢুকলাম। এই একজন প্রানী ছাড়া আর কেউই এই বাড়িতে থাকে না। টিনের চালা নষ্ট হয়ে মাঝে মাঝে ফুঁটো হয়ে গেছে। বাড়ির দেওয়ালে ঝুল-কালি, যেন কয়েকদিন হল পরিষ্কার করা হয়নি। কয়েকটি বই-খাতা টেবিলের উপর সুন্দর করে সাজানো-গোছানো, গুটি কয়েক শাড়ি-চুড়িদার আর শালোয়ার কামিজ আলনায় পরিপাটি করে রাখা আছে।           মেয়েটি আমার মুখের কাছে জল আর সরবতের গ্লাস দুটোই ধরল। আমিও আর কোনো দ্বিধা না করেই দু চুমুকেই শেষ করলাম। “আচ্ছা বোন তুমি এই ধ্বংসপুরীতে একাই রয়েছ। বাকি সব কোথায় গেল? আর তোমার বাড়ির লোকজনই বা কোথায়? মেয়েটি কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল।           আমার বাবা-মা-ভাই-বোন সবাই ছিল। এমনকি এই এলাকাতে লোকজনের বিশাল সমাগম ছিল, প্রত্যেক বাড়ির মা-মেয়ে-বৌদিরা প্রতি সোমবার এই শিব মন্দিরে পুজো দিতে আসত, আজ থেকে নয় বছর আগেই এই গ্রাম উজাড় হয়ে গেছে। আর তার জন্য আমার বাড়ির লোকেরাই দায়ী।        ...

সেই গন্ধটা আজও আছে (পর্ব - ১) - ডঃ অসিত কুমার মাইতি

Image
সেই গন্ধটা আজও আছে      আ জকের শহর থেকে কয়েক মাইল দূরে এই পাড়াগাঁ। অচেনা শবর টাউনেরই একটা কোলে রয়েছে। জায়গাটা   অজ পাড়াগাঁ। রাস্তার দুপাশে জঙ্গলের জটলা আর চারিপাশের বাচামরা লতাপাতার মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে পা গুলোর স্পর্শে ধূলি-বালির কণাগুলো আবার তাদের আনন্দের জীবন গতি ফিরে পায়। স্বাচ্ছন্দে আবারও বাতাসে ভেসে বেড়াতে চেষ্টা করেছে। প্রথম প্রথম পাড়াগাঁ বলেই মনে হয়েছিল। ধীরে ধীরে যত এগোচ্ছি এই ধারানাটা নিমেষেই হারিয়ে যাচ্ছে। গাছ পাতার আড়ালে- আবডালে দ্বিতল- ত্বি-তল বাড়িগুলো   আমার সাথে লুকোচুরি খেলায় মেতেছে। সেখানেই রয়েছে দু-একটা টিউবওয়েল যেগুলো ব্যবহার না হওয়ায়, নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে, আর ঘরগুলির ভাঙ্গা সার্সি, লোহার পাইপ দেখে মনেই হবেনা সেখানে আগে একটা পাড়াগাঁ ছিল। দু একটা ভাঙ্গা টিনের চালা, যেগুলো সক্ত-পোক্ত কাঁচা ইট আর টালির বাড়ি ছিল,তারা আজ নিজেদের কঙ্কালসার পাঁজর নিয়ে কোনমতে নিজের এলাকাটাকে টিকিয়ে রেখেছে।দু-পা গেলেই একটা বিসাল প্রশস্থ নর্দমা, তার দুপাশ সুন্দর মোজাইক করাছিল। আজ তারও করুন অবস্থা, গলাভর্তি শ্যাওলা তাঁরই মধ্যে দুএকটা বাচ্চা ব্যাঙ লাফালাফি করছে।...